Tuesday, October 14, 2014

একটি পাগল ছেলের গল্প



একটা গল্প শুনবেন। গল্প, শুধুই গল্প।
যে গল্পে থাকবে একটা পাগল ছেলে। যার
জীবনে উচ্চাকাংখা বলে কিছুই নেই।
যে বর্ষাকালে বারান্দায় প্রিয়জনের
সাথে বসে টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ
শুনতে চায়।
পরীক্ষা ফেলে বৃষ্টিতে ভিজতে যায়।
মাঝে মাঝেই বাড়ি থেকে পালিয়ে কোথায়
চলে যায় কেউ জানে না। আর
থাকবে একটা মেয়ে, অতি সাধারন।
ছেলেটা ভীষন ভালবাসবে মেয়েটাকে।
যে ভালবাসা কখোনো কিছু
দিয়ে পরিমাপ করা যায় না। আর মেয়েটা?
মেয়েদের মন কবে কে বুঝতে পেরেছ?
সে কি চায় নিজেও তা জানবে না।
জানি এই গল্পের পরিনতি ভাল হবে না।
তবুও
ছেলেটা গল্পটা এগিয়ে নিতে চাইবে।
2
মেয়েটা কি তার সঙ্গ দেবে? অবশ্যই
দিবে। কারন মেয়েটাও
যে ভালবাসে ছেলেটাকে। মেয়েটা চায় তার
ভালবাসা প্রকাশ করতে। আর ছেলেটা চায়
ভালবাসা হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে।
মুখের কথা দিয়ে নয়। ছেলেটা কিছুতেই
বুঝে উঠতে পারে না, “দিনের মধ্যে হাজার
বার ভালবাসি না বললে কি হয়?
ভালবাসা কি কমে যায়? ”কিন্তু
মেয়েটা বুঝতে চায় না। সারাক্ষণ
অপেক্ষায় থাকে। অন্তত একবারের জন্য
হলেও ছেলেটা তাকে বলুক। বলুক,
“ভালবাসি, শুধুই তোমাকে।“ ছেলেটার
মুখের এই ছোট্ট বাক্যটাই তার সকল
প্রেরণা। তাইতো সকাল দুপুর সন্ধা নেই
ফোনের পর ফোন দিয়ে যায়। শুধু একবার
ভালবাসি শোনার অপেক্ষায়। দুইজনের
অনুভুতি, দুই জনের চাওয়া পাওয়া সবই
ভিন্ন। তারপরও গল্পটা এগিয়ে চলে।
হাসি, কান্না, আনন্দ, ব্যাথা-বেদনার
মিশ্রনে।
3
এটা একটা পাগল ছেলের গল্প।
পাগলামি না করলে কি চলে? শুরু হয় তার
পাগলামী। হটাৎ করেই সে যোগাযোগ
বন্ধ করে দেয় মেয়েটার সাথে।
“ভালবাসি ভালবাসি বলে চিৎকার
করাটা তার লোক
দেখানো মেকি মনে হয়।“ যোগাযোগ
বন্ধ করে দিলে কি হবে, তার
প্রতিটা স্বপ্ন জুড়ে থাকে মেয়েটা। তার
প্রতিটা কাজের
প্রেরণা হয়ে থাকে মেয়েটা। তার
অনুভুতি জুড়ে তার অস্তিত্ব জুড়ে শুধু
সেই মেয়েটা আর মেয়েটা। আর মেয়েটার
কি খবর?
ছেলেটাকে হাড়িয়ে সে পাগল প্রায়। খায়
না ঘুমায় না এমন কি বেঁচে থাকতেও চায়
না। তবুও বেঁচে থাকতে হয়। জীবনের
প্রয়োজনে। সময় গড়িয়ে যায়। মাসের পর
মাস, বছরের পর বছর।
ছেলেটা ভুলতে পারে না মেয়েটাকে।
তাকে নিয়েই ভাবে। তাকে নিয়েই স্বপ্ন
দেখে।
তারপর?

4
না, এটা একটা গল্প। বাস্তব কিছু নয়।
গল্পের মেয়েরা একটু অন্য রকম হয়। তাই
মেয়েটা ছেলেটাকে আবার ফোন করে।
কথা হয় দুজনার। তারা ভুলে যায়
মাঝখানে কয়েক বছর পার হয়ে গেছে।
জীবন
থেকে তারা হাড়িয়ে ফেলেছে অনেক
মুল্যবান
সময়। সেই সময়ের
প্রয়োজনে ছেলেটা হাড়িয়ে ফেলেছে তার
ভালবাসা। হাড়িয়ে ফেলেছে তার প্রানের
প্রিয়াকে। মেয়েটা আর তার নেই।
বিয়ে করেছে তার পছন্দের ছেলেটাকে।
যে তার খবর নেয়। দিনের মধ্যে হাজার বার
ভালবাসি ভালবাসি বলে তার পায়ে লুটায়।
ছেলেটার আকাশে আজ মেঘের ঘনঘটা।
যখন তখন বৃষ্টি নামে। তার
এলোমেলো জীবনটা আরো এলোমেলো হয়ে যায়।
তবুও সে মেয়েটার ভাল চায়।
চাইবে না কেন, দোষটাতো মেয়েটার না।
সেই-তো যোগাযোগ বন্ধ করেছিল।
নিজের দোষে নিজেকে ছাড়া আর
কাউকে তো শাস্তি দেয়া যায় না।
তাইতো নতুন করে নতুন ভাবে বাঁচতে চায়
সে। যেহেতু এটা গল্প। তাই শেষ হয়েও
শেষ হয় না।

5
কোন একদিন গভীর রাতে ছেলেটার
ফোন বেজে ওঠে। রিসিভ করতেই সে শুধু
কান্নার শব্দ শুনতে পায়। মেয়েটা কাঁদছে।
কাঁদছে তো কাঁদছেই।
কান্না জড়ানো কন্ঠেই মেয়েটা বলে,
“আমি জানি আমার ফেরার পথ নেই। তবু
একটা কথা বলতে চাই। আমি শুধু
তোমাকে ভালবাসি। শুধুই তোমাকে। আর
কাউকে নয়। কোন দিন কাউকে বাসতেও
পারব না।“ ফোন কেটে যায়।
একাকী ছেলেটা জেগে থাকে। দু
চোখে বৃষ্টি নামে। সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়,
যা হবার তাই হবে। এভাবে কষ্ট পাওয়ার
মানে হয় না। কথা বলে মেয়েটার সাথে।
মেয়েটা সাড়া দেয় আগের মত। দুজন
দুজনকে পেতে চায় আপন করে।
কিন্তু সমাজ?
মেয়েটাই এগিয়ে আসে এর সমাধানে।
সে বিয়ে করেছে ঠিক। তবে একদিনও
স্বামীর ঘর করেনি। সে তালাক
দিয়ে দিবে স্বামীকে। তারপর দুজন
পালিয়ে যাবে। ঘর পালানো ছেলেটার
কাছে কাজটা সহজই মনে হয়।
তারপর?
তার আর পর নেই। ছেলেটা অপেক্ষায়
থাকে মেয়েটার। মেয়েটা ফোন দেয় না।
ছেলেটা ফোন দেয়। মেয়েটা ফোন ধরে না।
ছেলেটা আবার ফোন দেয়। মেয়েটা ধরে না।
ধরে না………………।
পরিশিষ্ট: গল্পটা শেষ। ছেলেটার
সাথে মেয়েটার আর কোনদিন দেখা হয়
নি। হয়ত
কোনদিন হবেও না। হয়ত মেয়েটা তার
স্বামী সংসার নিয়ে সুখে দিন কাটাচ্ছে।
কিন্তু
মাঝরাতে মেয়েটার বলা একটা বাক্য
ছেলেটাকে আজ পাগল করে দিয়েছে।
আজও
তার কানে বাজে, “আমি জানি আমার
ফেরার পথ নেই। তবু একটা কথা বলতে চাই।
আমি তোমাকে ভালবাসি। শুধুই
তোমাকে। আর কাউকে নয়।“

2 comments: